September 5, 2025, 4:00 pm

নয়া বাংলাদেশ ডেস্ক

বুয়েনস আইরেসের মনুমেন্টাল স্টেডিয়াম এক অনন্য দৃশ্যের সাক্ষী হলো। ভরা গ্যালারি, অশ্রুসিক্ত উল্লাস, আর সেই পরিচিত নম্বর–১০। লিওনেল মেসি জানতেন, এটাই তার দেশের মাটিতে শেষ অফিসিয়াল ম্যাচ। ঠিক সেভাবেই সাজানো ছিল মঞ্চ: সন্তানদের হাত ধরে মাঠে প্রবেশ, টানা করতালি আর সমর্থকদের হৃদয়ভরা ভালোবাসা। আর পারফরম্যান্সে যথারীতি অতুলনীয়—দুটি গোল আর একাধিক স্মরণীয় মুহূর্তে ভরিয়ে দিলেন রাতটাকে।

‘দেশের মানুষের ভালোবাসাই আমার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি,’ ম্যাচ শেষে আবেগঘন কণ্ঠে বললেন মেসি। ‘অনেক বছর বার্সেলোনায় ভালোবাসা পেয়েছি, এখনো পাই। কিন্তু স্বপ্ন ছিল নিজের দেশে, নিজের মানুষের সামনে তা পাওয়ার। আজ সেই স্বপ্ন পূর্ণ হলো।’

প্রথমার্ধের ৩৯ মিনিটে জুলিয়ান আলভারেজের দারুণ পাস থেকে গোল করে আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে নেন অধিনায়ক। এরপর সমর্থকদের কণ্ঠে ধ্বনিত হলো ‘লিও মেসি আছে পাশে, পুরো পথ আমরা পাড়ি দেব একসঙ্গে।’

দ্বিতীয়ার্ধে লাউতারো মার্টিনেজের হেডে আসে দ্বিতীয় গোল, আর কিছুক্ষণ পর থিয়াগো আলমাদার সঙ্গে বোঝাপড়ায় মেসির দ্বিতীয় গোল—স্কোরলাইন ৩-০। যদিও একপর্যায়ে দুর্দান্ত চিপে হ্যাটট্রিকের কাছাকাছি ছিলেন, কিন্তু অফসাইডের কারণে সেটি বাতিল হয়।

পুরো রাতজুড়ে মেসির চোখেমুখে ভেসে উঠেছিল আবেগ। ওয়ার্ম-আপেই করতালির বন্যা তাকে কাঁপিয়ে দিয়েছিল, ম্যাচ শেষে সন্তানদের নিয়ে দর্শকদের উদ্দেশে হাত নাড়তে গিয়ে প্রায় চোখ ভিজে উঠেছিল। স্ত্রী আন্তোনেলা ও পরিবারের সদস্যরা গ্যালারি থেকে প্রত্যক্ষ করেছেন সেই অনন্য মুহূর্ত।

ম্যাচশেষে মেসি স্মরণ করেন কঠিন সময়ের কথাও— ‘অনেক বছর নানা সমালোচনা হয়েছে। আমরা চেষ্টা করেছি, কখনো সফল হয়নি। আজ সেসব ভেবেও গর্ব হয়। কারণ, শেষ পর্যন্ত এই ভালোবাসা পেয়েছি।’

ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্নে সতর্ক উত্তর দিলেন তিনি: ‘আগামী নয় মাস দ্রুত কেটে যাবে। আমার লক্ষ্য ফিট থাকা, দিন-দিন করে এগোনো। আজ যা পরিষ্কার, সেটি হলো—এটাই দেশের মাটিতে আমার শেষ অফিসিয়াল ম্যাচ।’

বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক হিসেবে মেসির ঝুলিতে আছে কোপা আমেরিকা, ফাইনালিসিমা, কোপা ইউএসএ আর সর্বোপরি কাতার বিশ্বকাপের গৌরব। এবার যোগ হলো নিজের দেশে বিদায়ী রাতের অবিস্মরণীয় স্মৃতি।

মনুমেন্টালের আলো–হাওয়ায় তাই এটি শুধু একটি জয় নয়; ছিল এক আবেগঘন বিদায়। আর মেসির নিজের কথায় সেটিই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি, ‘দেশের মানুষের ভালোবাসাই আমার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


ফেসবুকে আমাদের সাথেই থাকুন