October 31, 2025, 5:38 pm
শিরোনামঃ
পুরান ঢাকায় জবি ছাত্রদলের  আহবায়ক সদস্য খুন তরুণদের কণ্ঠে জলবায়ু বার্তা: ‘ভয়েস অফ ক্লাইমেট’ ফ্ল্যাশমবে স্থানীয় দাবি বিশ্ব মঞ্চে কুড়িগ্রামে বিশ্ব বসতি দিবস উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত ঝিনাইদহে জামায়াত নেতা আশরাফুল ইসলামের ইন্তেকাল — জেলা জামায়াতের শোক প্রকাশ রাবি শিক্ষকদের নিয়ে অশ্লীল মন্তব্য হিন্দুদের বাড়ি ঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লুটপাট চালিয়েছে আ.লীগ- ড. মঈন খাঁন রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে সা’পের কামড়ে কিশোরের মৃ’ত্যু “এনসিপিতে চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজ ও দূর্নীতিবাজ কোন নেতা কর্মী নেই” — রাজু আহমেদ পলাশে নিখোঁজের পরদিন প্রবাসীর মরদেহ মিলল রেল লাইনের পাশে শৈলকুপার কিসমত আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ঘটনায় ন্যায় বিচার চেয়ে প্রধান শিক্ষকের পরিবারের সংবাদ সম্মেলন

জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি কীভাবে কাজ করে, এটা খেলে কি মানুষ মোটা হয়?

Reporter Name

জন্মনিয়ন্ত্রণে অনেকেই ভিন্ন ভিন্ন প্রতিরোধমূলক পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকেন। এর মধ্যে অন্যতম হলো জন্মনিরোধক বা ওরাল কন্ট্রাসেপ্টিভ পিল সেবন। কেউ চিকিৎসকের পরামর্শে এ পিল ব্যবহার করেন, আবার কেউ নিজ উদ্যোগেই তা গ্রহণ করে থাকেন। তবে জন্মনিরোধক বা ওরাল কন্ট্রাসেপ্টিভ পিল নিয়ে সাধারণ মানুষের প্রশ্নের শেষ নেই। অনেকে মনে করেন জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি খেলে কি মানুষ মোটা হয়ে যায়। তবে আদৌ কী তাই? বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে ওঠে আসে এর উত্তর।

প্রথমে জেনে নেওয়া যাক জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি কী? কীভাবে কাজ করে

জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি মূলত নারীদের জন্য তৈরি এক ধরনের ওষুধ। এতে বিশেষ হরমোন থাকে, যা ডিম্বাশয় থেকে ডিম নিঃসরণে বাধা দেয় এবং গর্ভধারণ প্রতিরোধ করে। সাধারণত এই বড়িতে ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টিন হরমোন থাকে। এর মূল কাজ হলো ওভুলেশন বা ডিম নিঃসরণ বন্ধ রাখা, আর ইস্ট্রোজেন মাসিকের রক্তপাত নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

চিকিৎসকদের মতে, বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি সেবন করলে প্রায় ৯৯ শতাংশ ক্ষেত্রেই গর্ভধারণ প্রতিরোধ করা সম্ভব।

 

জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় হলো মুখে খাওয়ার বড়ি। বাজারে পাওয়া যায় কয়েক ধরনের বড়ি—কম্বাইন্ড ওরাল পিল, প্রোজেস্টেরন-অনলি পিল (মিনিপিল) এবং ইমার্জেন্সি পিল। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় কম্বাইন্ড পিল, যা ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন হরমোনের মিশ্রণে তৈরি।

বিশেষজ্ঞরা জানান, প্রথম প্রজন্মের বড়িতে হরমোনের মাত্রা অনেক বেশি থাকলেও বর্তমানে তা কমিয়ে আনা হয়েছে। ফলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও তুলনামূলক কম। সাধারণত কম্বাইন্ড পিল ২৮ ট্যাবলেটের একটি পাতায় পাওয়া যায়—এর মধ্যে ২১টি সক্রিয় পিল এবং ৭টি আয়রনযুক্ত নিষ্ক্রিয় পিল থাকে। নিয়ম অনুযায়ী মাসিকের প্রথম দিন থেকেই বড়ি খাওয়া শুরু করতে হয় এবং টানা ২১ দিন খেতে হয়।

প্রথম দিন খেতে ভুলে গেলে মাসিকের পঞ্চম দিন পর্যন্ত যেকোনো দিন বড়ি শুরু করা যায়। আর যদি মাঝপথে একদিন পিল খাওয়া বাদ পড়ে, তবে পরদিন মনে পড়ামাত্র সেই পিল খেয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।

তবে অনেকের মনে প্রচলিত একটি ধারণা রয়েছে বা সাধারণ জিজ্ঞেসা রয়েছে-পিল খেলে কি মোটা হয়ে যায়?

এ বিষয়ে চিকিৎসকরা বলছেন, জন্ম নিয়ন্ত্রণ বড়ি খেলে মেয়েরা মোটা হয়ে যায় এটি সঠিক নয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ওজন বাড়ে।

কিন্তু সেটা শরীরে জলীয় পদার্থ জমে যাওয়ার কারণে বাড়ে। আর পিল খাওয়ার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ায় এই জলীয় পদার্থ জমে যায়, যা আবার কয়েক মাসের মধ্যে চলেও যায়।

হলি ফ্যামিলি হাসপাতালের চিকিৎসক অধ্যাপক কিশোয়ার লায়লা গণমাধ্যমে বলেছেন, ‘আগে পিল খেলে মোটা হতো এমন ধারণা ছিল। কিন্তু সেটা সঠিক ছিল না। আবার এখন আধুনিক যেসব লাইট পিল পাওয়া যায় সেসব খেলে মোটা হয় এটাও ঠিক না। অর্থাৎ পিলের জন্য মোটা হয় এ তথ্য সঠিক নয়।’

বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের চিকিৎসক অধ্যাপক রেজাউল করিম কাজল বলেছেন, শুরুর দিকের পিলগুলোতে যে হরমোন ব্যবহার করা হতো, তাতে ক্ষুধা বাড়ত, শরীরে কিছুটা পানিও জমাতো- তাই ওজন বাড়ত।

অনেকে আবার ভাবেন জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি খেলে সন্তান জন্মদানের সক্ষমতা কমে যায় ?

তবে চিকিৎসকরা বলছেন, এ ধারণাটি সঠিক নয়। এটি সন্তান জন্মদানের সক্ষমতায় কোনোভাবেই প্রভাব ফেলে না। পিল বন্ধ করার পর মাসিক শুরু হতে কিছুটা দেরি হতে পারে, তবে প্রজনন সক্ষমতা বা ফার্টিলিটি আবার স্বাভাবিকভাবেই ফিরে আসে।

এ বিষয়ে অধ্যাপক রেজাউল করিম বিবিসি বলেন, তৃতীয় ও চতুর্থ এ দুই প্রজন্মের পিল দীর্ঘদিন ব্যবহার করলেও ভবিষ্যতে সন্তান ধারণের ওপর কোনো প্রভাব ফেলে না। তবে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে চিকিৎসকরা নারীদের জন্ম নিয়ন্ত্রণ বড়ি খাওয়া থেকে বিরত থাকা বা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খাওয়ার বিষয়ে গুরুত্ব দেন।

কিছু ক্ষেত্রে নারীদের জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি সেবনে সতর্কতা অবলম্বন করতে বা একেবারেই বিরত থাকতে বলা হয়। যেমন—৪০ বছরের বেশি বয়স, অজ্ঞাত কারণে যোনিপথে রক্তক্ষরণ, কিংবা রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি থাকলে এ পিল সেবন নিরুৎসাহিত করা হয়।

এ ছাড়া যেসব নারীর রক্ত জমাট বাঁধাজনিত সমস্যা, রক্তনালির রোগ, অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ বা ডায়াবেটিস, ব্রেস্ট ক্যানসার, লিভারের রোগ, জন্ডিস বা লিভার ক্যানসার, আগে স্ট্রোক হয়েছে অথবা হার্টের জটিলতা রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি খাওয়ার আগে বাড়তি সতর্কতা প্রয়োজন।

চিকিৎসকরা আরও বলেন, বড় কোনো অস্ত্রোপচারের আগে জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি চালু রাখা বা বন্ধ করার বিষয়ে অবশ্যই ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করতে হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


ফেসবুকে আমাদের সাথেই থাকুন