এ সংক্রান্ত এক মিনিট ২১ সেকেন্ডের একটি কল রেকর্ড ও এক মিনিট ২৪ সেকেন্ডের একটি ভিডিও রেকর্ড ফাঁস হয়েছে।
অভিযুক্ত জায়ামাত নেতার নাম আনিসুর রহমান। তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর অঙ্গসংগঠন শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের রাজিবপুর উপজেলা সভাপতি।
২০১৩ জামায়াতে ইসলামী রাজীবপুর উপজেলা শাখা কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনায় করা মামলার ভয় দেখিয়ে চাঁদা দাবি করেন বলে ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে।
অডিওতে শোনা যায়, জামায়াত নেতা আনিসুর রহমান ওই ব্যবসায়ী বাবুকে ফোন দিয়ে বলেন, “বাবু শোনো তোমার বিষয়ে আমাকে ফোন দিয়েছিল অফিসার (ওসি)। আমি বলছি ও আমার ছোট ভাই, বিষয়টা আমি দেখব। তা বলে সবি আপনি দেখবেন তাহলে আমাদের এখানে কি? তা বলছি আপনাদের বিষয়টাও আমি দেখবো। তুমি আমার সাথে জরুরি দেখা কর। তোমার যদি একটা পশমের (চুল) ক্ষতি হয়, আমি রাজীবপুরে দ্বিতীয় দিন আর মুখ দেখাব না। অপরপ্রান্ত থেকে ওই ব্যবসায়ী কিছু বলতে চাইলে তাকে ধমক দিয়ে ধামিয়ে দিয়ে জামায়াত নেতা বলেন, “আমার কথা শোন তুমি বেশি কথা বল কিসের জন্য? আমি তোমাকে যে কথা বলছি এর থেকে বড় কোনো কথা আছে? তুমি কিসের বা*** চিন্তা কর।”
অডিওতে জামায়াত নেতাকে বলতে শোনা যায়, “আমি বলছি তোমার যদি একটা পশমের যদি ক্ষতি হয় তাহলে তুমি মোড়ের মধ্যে আমাকে জুতা পেটা করবা। এক ঘণ্টার মধ্যে তুমি কোথায় ডাকো আমি যাইতেছি। তুমি আমার মোটরসাইকেলের মধ্যে ঘুরবা। পৃথিবীর কোনো শক্তি নেই ইনশাআল্লাহ। যদি তোমার পশমের ক্ষতি হয় তখন তুমি আমাকে বলবা। তুমি ফ্রি থাকো ‘আলহামদুল্লিাহ বলে দুই গ্লাস পানি খাও।’ তোমার ভাই আছে তোমার পাশে।” এরপর ওই ব্যবসায়ী আনিসুর রহমানের সঙ্গে দেখা করে তার মোটরসাইকেলে ওঠেন। মোটরসাইকেলে ওঠার ভিডিতেও ওই একই কথা বলতে শোনা যায় “তোমার বিষয়টা আমি দেখব তুমি ৫০ হাজার টাকা রেডি কর।”
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ব্যবসায়ী বাবু মিয়া বলেন, জামায়াত নেতা আনিসুর আমাকে মামলা ও পুলিশের ভয় দেখিয়ে ৫০ হাজার টাকা চাইছে।আমি একজন ব্যবসায়ী, আমি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত না। অনেক আগে থেকেই আমি রাজীবপুর বাজারে পার্টসের ব্যবসা করে আসছি। বর্তমানে আমি নিরাপত্তাহীতায় ভুগতেছি।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি আনিসুর রহমান বলেন, আমি তার কাছে কোনো টাকা চাইনি, এসব ষড়যন্ত্র। অডিও-ভিডিওর বিষয়ে তিনি বলেন, অডিওটি রেকর্ডটি এডিট করা হলেও ওই ব্যবসায়ী তার মোটরসাইকেলে ঘোরার বিষয়টি স্বীকার করেন এই নেতা।
আনিসুর আরো বলেন, ২০১৩ সালে জামায়াতের অফিস ভাঙচুর হয়েছে, আর মামলা হয়েছে ৫ আগস্টের পর। সে সময় তার বয়সও হয়নি, সে মামলার আসামি হয় কিভাবে।
এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম জেলা জামায়াতের আমির আব্দুল মতিন ফারুকী বলেন, বিষয়টি আমরা জেনেছি। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রাজীবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরিফুল ইসলাম বলেন, আমি নতুন এসেছি। আসার পর থেকে একটা মামলাও নথিভুক্ত করতে পারিনি। আমার সময় এরকম কোনো ঘটনা ঘটেনি, যদি কখনও এমন ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।