পলাশে তাহফীজুল কোরআন আল উলুম মিদ্দিনিয়াহ মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা নূহকে অব্যাহতি
নাজমুল হাসান ( নরসিংদী),
নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ভাগ্যেরপাড়া এলাকায় অবস্থিত বেসরকারি প্রাইভেট হাফেজিয়া মাদ্রাসা তাহফীজুল কোরআন আল উলুম মিদ্দিনিয়াহ মাদ্রাসা-এর অধ্যক্ষ মাওলানা নূহ সাহেবকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে।
গত ৪ মে ২০২৫ ইং তারিখে মাদ্রাসার সূরা কমিটি, মতুয়ালি ও মালিকপক্ষের যৌথ সভায় সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে রেজুলেশন করে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ সময় স্থানীয় আলেম-ওলামা, সাংবাদিকসহ সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
অভিযোগ রয়েছে, অধ্যক্ষ নূহ দায়িত্ব পালনে গাফিলতি, অনিয়ম, আর্থিক স্বচ্ছতার অভাব এবং কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অমান্য করে আসছিলেন। মালিকপক্ষ জানায়, তিনি প্রতি শুক্রবার মাত্র এক ঘণ্টার জন্য মাদ্রাসায় উপস্থিত হতেন, আবার চলে যেতেন। দীর্ঘ তিন বছর দায়িত্বে থাকলেও শিক্ষাকার্যক্রমে কোনো উন্নতি হয়নি। হাফেজিয়া মাদ্রাসা হওয়া সত্ত্বেও হাফেজ শিক্ষক নিয়োগ কিংবা শিক্ষার্থীদের হিফজ সম্পন্নের উদ্যোগ নেননি।
এছাড়া অভিযোগ রয়েছে, মাদ্রাসার নামে ওয়াকফকৃত তিনতলা ভবনের ভাড়ার টাকা তিনি ব্যক্তিগতভাবে দাবি করতেন। অথচ গ্যাস বিল, পৌরকর ও পানি নিষ্কাশন বাবদ প্রায় ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা পরিশোধ হলেও তিনি কোনো সহযোগিতা করেননি। বরং মতুয়ালির সঙ্গে আর্থিক লেনদেন ও সম্পত্তি ব্যবস্থাপনাকে কেন্দ্র করে দ্বন্দ্ব তৈরি করেন।
সূরা কমিটির সদস্যরা জানান, প্রতিষ্ঠানের আয়-ব্যয়ের সঠিক হিসাব কখনো দেননি নূহ। উল্লেখযোগ্য অর্থ গ্রহণের পরও কোনো জবাবদিহি ছিল না। এমনকি ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে থাকা তার ব্যক্তিগত মাদ্রাসায় এই প্রতিষ্ঠানের অর্থ ব্যয় করার প্রমাণ মিলেছে।
অভিযোগ উঠেছে, দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়ার পরও মাওলানা নূহ সাহেব জোরপূর্বক পদে বহাল থাকার চেষ্টা করছেন। মালিকপক্ষকে হয়রানি করতে তিনি কখনো থানায় নিয়ে যাচ্ছেন, কখনো নিজের পছন্দমতো কমিটি গঠন করে বিচার বসাচ্ছেন, আবার বিভিন্ন কৌশলে মালিকপক্ষকে সামাজিকভাবে হেয় করার চেষ্টা চালাচ্ছেন।
মাদ্রাসার মালিকপক্ষের দাবি, নূহ একজন অহংকারী ও স্বার্থপর ব্যক্তি, যিনি প্রতিষ্ঠানের আয় নিজের স্বার্থে ব্যবহার করতে চান। এর ফলে প্রতিষ্ঠানের সুষ্ঠু পরিচালনা ব্যাহত হচ্ছে। তারা জানান, দ্রুত আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি নতুন প্রধান নিয়োগ করে শিক্ষাকার্যক্রম সচল রাখার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।